নুরুল আমিন হেলালী:

পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই কক্সবাজার সমুদ্র মৈকতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষণীয়। সকল পর্যটন স্পট করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সরকার পরিস্থিতি বিবেচনায় কয়েক মাস আগে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে বিশ্বের এই দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। এর পর থেকে পর্যটক আসা শুরু করে। কিন্তু ১৬ডিসেম্বর ও ১৭ ডিসেম্বর পরিস্থিত
ছিল সম্পুর্ন ভিন্ন।
সৈকতে গিয়ে দেখা যায় কোথাও তিল ধারনের ঠাঁই নেই। স্থানীয়, দেশী ও বিদেশী পর্যটকে টইটম্বুর সমুদ্র সৈকত।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ভ্রমন পিপাসু পর্যটক ও স্থানীয়দের পদচারণায় মুখরিত সমুদ্র সৈকতসহ জেলার বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রগুলো।

পর্যটন স্পটগুলো দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছিল এই খাতে বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীরা। থমকে গিয়েছিল পর্যটন খাত, সুনসান নিরবতা পালন করেছে কলাতলি হোটেল-মোটেল জোনসহ কক্সবাজারের পর্যটন সংশ্লিষ্ঠ বিনোদন কেন্দ্রে।

তবে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকার গত ১৯ আগস্ট সমস্ত পর্যটন স্পট খুলে দেয়। এই সুযোগে দেশের অন্যান্য পর্যটন এলাকার মতো কক্সবাজারেও প্রতিদিন ছুটে আসছেন হাজারো পর্যটক। পর্যটকের পাশাপাশি সৈকতে ভিড় করেছেন স্থানীয়রাও। প্রথমদিকে প্রশাসনের কড়াকড়িতে কিছুটা হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা গেলেও এখন কারোই ছিল না স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবনতা।
পর্যটন সংশ্লিষ্ঠরা বলছেন , হোটেল মোটেল ও পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার পর থেকে প্রচুর পর্যটক কক্সবাজারে আসছেন। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় পর্যটক একটু বেশি এসেছেন। এখন একটি হোটেলে গাদাগাদি করে অতিরিক্ত পর্যটক থাকছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সমুদ্র সৈকতের লাবণী, সী-গাল, সুগন্ধা, কলাতলি পয়েন্টে হাজার হাজার পর্যটক সমুদ্র স্নান ও কিটকটে বসে সময় পার করছেন। কিন্তু সেখানে যে যার মত সময় কাটাচ্ছেন।

ঢাকার মিরপুর থেকে স্ব-পরিবারে বেড়াতে আসা মোশারফ, জামিল, অপুসহ কয়েকজন পর্যটক বলেন, কক্সবাজার এসেছি মুক্ত বাতাস ও সমুদ্র সৈকতে বেড়ানোর জন্য।

অন্যদিকে স্থানীয়রা বলছেন ,ছুটি পেয়ে অনেকে গ্রুপ করে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছেন। চাঙ্গা হয়েছে পর্যটনখাত। এতে করে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা পর্যটন খাতের ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে নিতে পারবেন বলেও তারা ধরণা করছেন।

তবে কিছু পর্যটকদের অভিযোগ রেস্টুরেন্টে খাবারের দাম না বাড়লেও আবাসিক হোটেল গুলোতে ভাড়া নিচ্ছেন ডাবল বা তার চেয়েও অনেক বেশী। এছাড়া গতরাতে হোটেলে রুম খালি না পেয়ে অনেক পর্যটক রাস্তায় কিংবা গাড়িতে রাত কাটিয়েছেন বলেও জানা গেছে।

স্থানীয় অনেকে নিজেদের থাকার ঘরের খালি রুমগুলোও ভাড়া দিয়েছেন হোটেল-মোটেল জোনে।

অপরদিকে শহরের অভ্যন্তরীণ সড়কে চলাচল কারী রিক্সা, টমটম, সিএনজি ও টুরিস্ট জীপগুলোর ভাড়া নিয়ে অনেক বিতর্ক। সব গাড়িতে পর্যটকদের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া অভিযোগ রয়েছে।১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর ছুটির দিন থাকায় পর্যটকবাহী অতিরিক্ত গাড়ির চাপে শহরের বাস টার্মিনাল থেকে হলিমোড় ও বার্মিজ মার্কেট পর্যন্ত জন ও যানবাহনে যানজট ছিল অসহনীয়। একদিকে শহরের সড়কগুলোর বেহালদশা অপরদিকে অতিরিক্ত মানুষ ও যানবাহনের চাপ ফলে অতি দুর্ভোগে নাকাল পর্যটন শহর। অনেকে গাড়ি না পেয়ে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছেছেন।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো: জিল্লুর রহমান বলেন, পর্যটক নিরাপত্তায় সৈকত এলাকায় পোশাকধারী পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সাদা পোশাকধারী পুলিশও পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করছেন।